এটি একধরনের “আরএনএ (RNA) ভাইরাস, যার প্রথম উপসর্গ সর্দি, কাশি, জ্বর থাকে। পরবর্তীতে সরাসরি ফুসফুস ও কিডনিতে আঘাত হানে। এটিকে নোভেল করোনা বা Covid-19 বলা হয়ে থাকে। গত ৩১শে ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম জানা যায় এই ভাইরাসের কথা।

সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে (২-১৪) দিনের মধ্যে লক্ষণ সমূহ প্রকাশ পায়।

প্রথম তিন দিনঃ
১) সাধারণ সর্দি, কাশি, হাল্কা গলা ব্যথা, তেমন জ্বর নেই।

চতুর্থ দিনঃ
১) গলা ব্যথা ১ম ৩ দিনের তুলনায় বেশি
২) মাথা ঘোরা ও কিছুটা ভারসাম্যহীন হওয়া
৩) শরীরের তাপমাত্রা আগের তুলনায় একটু বেশি।

পঞ্চম দিনঃ
১) গলা ব্যথা আগের তুলনায় একটু বেশি
২) জ্বর, মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হওয়া

ষষ্ঠ দিনঃ
১) তীব্র জ্বর, শুকনা কাশি, শ্বাসকষ্ট, বমি ও ডায়রিয়া।

সপ্তম দিনঃ
১) তীব্র জ্বর, কফ সহ কাশি, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা।

অষ্টম দিনঃ
১) জ্বরের মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পাওয়া
২) শ্বাসকষ্ট, বিরতিহীন কাশি
৩) মাথা ব্যথা, জয়েন্ট ব্যথা, মাংশ পেশিতে ব্যথা।

নবম দিনঃ
১) আগের সকল উপসর্গ থাকবে তবে সেগুলো মারাত্মক আকারে ধারণ করবে।

১) বাসায় একটি আলাদা কক্ষে অবস্থান করুন।
২) পরিবারের অন্য সদস্যদের নিকট থেকে নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রাখুন। কমপক্ষে ১ মিটার বা আরো বেশি।
৩) ঘন ঘন হাত পরিস্কার করুন (সাবান পানি অথবা হ্যান্ডওয়াশ অন্তত ২০ সেকেন্ড)।
৪) যদি জ্বর বেশি থাকে তবে, ট্যাবলেট নাপা ৫০০ মি.গ্রাম ১টা করে ৩ বেলা খাবেন।
৫) অসুস্থতা বেশি হলে নিকটস্থ হাসপাতালে বা করোনা হেল্প লাইনে যোগাযোগ করুন।

না, সার্স ২০০২ সালে আঘাত হানে এটিও ফুসফুসের একটি রোগ তবে কোভিড-১৯ এবং সার্সের মধ্যে সব উপসর্গ একই নয়।

১) করোনাভাইরাস গত ৩ মাসে ৪০০ বার তার জেনিটিক গঠন পরিবর্তন করেছে। প্রতি সেকেন্ডে এটি এর জেনিটিক গঠন পরিবর্তন করছেন। যার ফলে এই ভাইরাসের এন্টিডোট তৈরি করা কষ্টকর হচ্ছে।
২) আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর নয়।
৩) এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন ভেক্সিন তৈরি হয়নি। তবে কিছু দেশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস যা বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক, সে সব অভ্যাস পরিত্যাগ করা উচিৎ। যেমন:
* ধুমপান
* অন্যের ব্যবহৃত মাক্স
* অহেতুক কিছু এন্টিবায়টিক গ্রহণ করা যা গুজব আকারে ছড়িয়েছে, কারণ এন্টিবায়টিক ব্যক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। ভাইরাসের বিরুদ্ধে এদের খুব একটা কার্যকারিতা নাই।

হ্যাঁ, এটা সরাসরি আমাদের ফুসফুসে আঘাত হানে, এছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্গান যেমন কিডনিতেও আঘাত হানে।

১) আক্রান্ত বা সন্দেহ জনক ব্যক্তির নিকট থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখুন।
২) যথা সম্ভব বাসায় অবস্থান করুন।
৩) একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে বের হবেন না।
৪) বাসার বাহিরে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন।
৫) ঘন ঘন হাত পরিস্কার করুন, সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড।
৬) যথা সম্ভব জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলুন, চোখ, মুখ, নাকে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
৭) হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন এবং সাথে সাথে তা ঢাকনাযুক্ত পাত্রে ফেলে দিন।
৮) টিস্যু না থাকলে হাঁচি কাশি দেয়ার সময় কনুই দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন।
৯) প্রতিবার হাঁচি কাশি দেয়ার পর হাত পরিস্কার করে ফেলুন।
১০) বাহির থেকে বাসায় ফিরে মুখমন্ডল, হাত কনুই পর্যন্ত পরিস্কার করুন। সম্ভব হলে গোসল করে ফেলুন।
১১) বেশি বেশি ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার গ্রহণ করেন।
১২) প্রতিদিন অন্তত কিছু ব্যয়াম করুন।
১৩) সম্ভব হলে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় কিছু প্রোটিন যুক্ত খাবার রাখুন।