PATHWAY

News & Events

পাথওয়ে সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম

পাথওয়ে সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ । উন্নয়নশীল দেশ  হওয়ার কারণে উন্নয়নের পাশাপাশি কিছু সমস্যাও দিন দিন বেড়েই চলছে । উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেশের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে । দেশের সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি বড় সমস্যা হল বেকারত্ব । বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেকারত্বের হার অনেক বেশি । দিন দিন বেকারত্বের হার প্রবল হারে দেখা যাচ্ছে । তাই সরকার থেকে আত্ম-কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে । সবাই সরকারি-বেসরকারি চাকরি লাভের আশায় বেকার হার বৃদ্ধি করছে । আত্ম-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা যায় এবং প্রকৃতপক্ষে স্বাবলম্বী হয়ে দেশের মানব সম্পদে রূপান্তরিত হওয়া যায় ।আত্ম-কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় মাধ্যম হল সেলাই বা দর্জি । বর্তমানে সেলাই বা দর্জির কাজ করে বেকারত্ব থেকে অনেকেই নিজের ভাগ্যকে পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিবর্তন করে আসছে ।

 









 বর্তমানে সেলাই প্রশিক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য । সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে বেকারত্ব দূরীকরণের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে । বাংলাদেশে দিন দিন বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে । বেকারত্ব কমানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো আত্ম-কর্মসংস্থান । আত্ম-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নিজের কর্মসংস্থান নিজেই গড়ে তোলা যায় । বাংলাদেশে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের হার বেকারত্বে সমান ।বাংলাদেশের শিক্ষিতের হার দিক দিয়ে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি । জীবনে কোন কাজকে ছোট করে না দেখে পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের কর্ম  নিজেই গড়ে তোলার চেষ্টা করা উচিত । ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে হলে কোন কাজই ছেলে বা মেয়েদের জন্য আলাদা করে দেখা উচিত নয় । বর্তমানে সেলাই প্রশিক্ষণ এমন একটি মাধ্যম যা সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । ছেলে ও মেয়েরা সবাই এখন দর্জি বা সেলাই প্রশিক্ষণে আগ্রহী হয়ে উঠেছে । দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন এই সেলাই প্রশিক্ষণ দেখা যায় । পাথওয়ে  বাংলাদেশের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা । দেশের প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক বিভিন্ন সমস্যায় মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দেশের এই বেকারত্বের হার কমানোর জন্য পাথওয়ে তার নিজ উদ্যোগে সরকারের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে ।একসময় সেলাই ছিল প্রাচীন বাংলাদেশের মানুষের আয়ের একটি উৎস। এখনো অনেক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয় এ উৎস থেকে। দর্জিশিল্পকে বলি সম্ভাবনাময় কর্মমুখী শিল্প । আমাদের গর্বের দর্জিশিল্প । দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে বিশাল ভূমিকা রাখছে দর্জিশিল্প । কাপড় সেলাই শুরুর আগে দর্জি দক্ষতা  অর্জন করা অবশ্যই প্রয়োজন। তাই কাপড় কাটা ও সেলাইয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

 

পাথওয়ে বেকারত্ব দূর করার জন্য ছেলেমেয়েদের মধ্যে দর্জি বা সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করে । পাথওয়ে মনে করে কর্ম ক্ষম ছেলেমেয়েদের মধ্যে যদি দর্জি বা  সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তাহলে তারা নিজের কর্মসংস্থান নিজেই সৃষ্টি করতে পারবে । পাথওয়ে ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে দর্জি বা সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে । পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় ধানখালী,মহিপুর,চম্পাপুর,লতাচাপলী,বালিয়াতলী,ধুলাসার

ইউনিয়নে দর্জি বা সেলাই প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চালু করে । প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ছেলেমেয়ে ও বয়স্ক বিভিন্ন শ্রেণীর লোক প্রশিক্ষণে অংশ নেয় । দল আকারে ২০ থেকে ২৫ জন করে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ৷ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় । প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে হাতে-কলমে তাদের দক্ষ প্রশিক্ষক এর দ্বারা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ।প্রত্যেকটি কোর্স তিন মাসের মেয়াদে হয়ে থাকে । প্রত্যেকটি প্রশিক্ষণার্থীদের যত্নসহকারে সেলাই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত জামা তৈরি প্রত্যেকটি পদক্ষেপ ভালো করে দেখানো হয় । এছাড়াও বরগুনা জেলার আমতলী থানা হলদিয়া গ্রামে সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হয় । মানুষের মধ্যেই কাজ শেখার জন্য পাথওয়ের পক্ষ থেকে সভা ও সেমিনার  আয়োজন করা হয় । পাথওয়ের সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । পাথওয়ের   সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সারা বাংলাদেশের পরিচালিত হয় । পাথওয়ে প্রথম ঢাকায় তাদের সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করে থাকে তারপর ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে এ কার্যক্রম পরিচালিত হয় ।

 

পাথওয়ে প্রশিক্ষন নিয়ে পটুয়াখালির জেলার কলাপাড়ায় মানুষদের মাঝে  আত্ম-কর্মসংস্থানের এর পতি জোর দিয়েছে ।তারা নিজেরা সাবলম্বি হচ্ছে । পাথওয়ে থেকে প্রশিক্ষন নেওয়া আমেনা বেগম । পটুয়াখালি জেলার কলাপাড়ায় বসবাস করে । পাথওয়ে কাছে তার জীবনের কিছু কথা আলোচনা করে । আমার নাম আমেনা বেগম। আমি গরিব পরিবারে জন্মগ্রহন করি । বাবা ভ্যান চালায় ।মা সংসারের কাজ করে । ছোট থেকেই আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেছি । বাবার স্বল্প আয়ে সংসার ঠিক ভাবে চলতো না । এক বেলা খাইলে আর এক বেলা ঠিক ভাবে খাইতে পারতাম না । বাবা ভ্যান চালিয়ে যতটুকু রোজগার করতো তা দিয়ে ঠিক ভাবে পরিবার চলে না । আমরা পরিবারে ৪ জন ছিলাম । বাবা চার জন মানুষ এর খাবার ঠিক ভাবে জোগার করতে পারত না । অভাবের সংসার তাই মা-বাবা ছোটতেই বিয়ে দিয়ে দেয় ।স্বামীর বাড়ি আসি । আমার স্বামীর নাম জুয়েল । আমার স্বামী মিস্ত্রীর কাজ করে । মিস্ত্রির কাজ করে আমদের সংসার চলতো ।আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমার স্বামী কোনমতে দিন পার করতাম অভাব অনটনে । একজনের আয় দিয়ে ঠিক ভাবে সংসার চলতো না । মাঝে মধ্যে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হত । অভাব  অনটন লেগেই থাকতো । স্বামীর তেমন আয়-রোজগার ছিল না । জীবন কষ্টে চলতে থাকে। এর মধ্যে পাশের বাড়ির জাহানারা খালা বলতেছে পাথওয়ে নামে একটি সংগঠনের শহর থেকে কিছু লোক আসছে  ফ্রী দর্জি বা সেলাই শেখাবে । যারা দরিদ্র অসহায় তাদের নাম লেখানোর জন্য বলতেছে । ফ্রীতে তাদের লোক দিয়ে ট্রেনিং দেওয়াবে এবং যাদের সেলাই মেশিন কেনার সামর্থ্য নাই তাদের ফ্রীতে মেশিন দিবে । আমি এ কথা শুনে আমি আমার শ্বশুর শাশুড়ি এবং স্বামীকে জানালাম । তারা শুনে না করল । তারা বলল মেয়েদের কোনো আয়-রোজগার করতে হবে না । মেয়েরা বাসায় সংসার এর কাজ করবে । আমি কিছু না বলে চুপচাপ চলে আসলাম ।আমি সারাদিন ভাবলাম যে  আমি কিভাবে তাদের বুজিয়ে বলতে পারবো । সন্ধ্যায় আমার স্বামী বাসায় আসলো । রাতে খাওয়ার পর সবাই যখন ঘরে চলে গেল তখন আমি তাকে ভয়ে ভয়ে বলতে শুরু করলাম । পাথওয়ে নামে একটি সংগঠন আসছে যারা গ্রামে নারী পুরুষদের সেলাই বা দর্জি প্রশিক্ষন দিবে । দর্জি কাজ শিখে যেন অর্থ উপার্জন করতে পারে সেই ব্যবস্থা  করবে । আমেনা তখন স্বামীকে বললো আমাদের পরিবারেও  অভাব অনটন লেগেই আছে । আমি দর্জি বা সেলাই এর কাজ শিখলে কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারবো । এতে আমাদের পরিবার ভাল ভাবে চলতে পারবে । সংসারে অভাব অনটন দূর হবে । আমেনার স্বামী জুয়েল প্রথমে দ্বিমত পোষণ করে । মেয়ে হয়ে দর্জি কাজ শিখতে হবে না । আমি যা রোজগার করি এতেই হবে । আমেনা তখন আর কিছু বলল না ।কিছু না বলেই ঘুমিয়ে পড়লো । পরের দিন আমেনা তার পাশের বাড়ির জাহানারা খালাকে বললো । খালা বলল পাথওয়ে প্রশিক্ষকরা নাকি বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে কাজ শেখার কথা বলে । তখন আমেনা খালাকে বললো সে যেন পাথওয়ে প্রশিক্ষককে বলে তাদের বাড়ি আসতে । তারা যেন এসে আমার পরিবার কে বোঝায় । পরের দিন সকাল বেলা পাথওয়ে প্রশিক্ষক দল হাজির আমেনার বাড়ি । পরিবারের সবাইকে ডাকলো সাথে আমেনাও বের হল । পাথওয়ে প্রশিক্ষক দল দর্জি বা সেলাই এর কথা তুলে ধরলো । সংসারের উন্নয়নে নারী পুরুষ উভয়ই কাজ করতে পারে তা বোঝানোর চেষ্টা করলো । পরিশেষে আমেনার পরিবার বুজতে পারলো যে ছেলে মেয়ে একসাথে কাজ করলে আর্থিক উন্নয়ন হবে ।তারা আমেনাকে দর্জি বা সেলাই শিখতে দিল । আমেনা কাপড় তৈরির সব গুলো কাজ শিখলো । আমেনার পরিবার দরিদ্র হওয়ার কারনে  পাথওয়ের পক্ষ থেকে একটি সেলাই মেশিন প্রদান করলো । আমেনা সেলাই মেশিন পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো । পাথওয়েও অনেক খুশি হলো আমেনার মত পরিশ্রমী মহিলাকে সহযোগীতা করতে পেরে । আমেনা সেলাই মেশিনে কাজ শুরু করলো । গ্রামের মানুষ আমেনাকে জামা তৈরির জন্য কাপড় দিতে লাগলো । আমেনা সুন্দর করে তাদের মনের মত করে পোশাক তৈরি করে দিত । আমেনা কাপড় তৈরির সুন্দর হওয়ার কারনে গ্রামের মানুষ আমেনার কাছে কাপড় বানাতে লাগলো । কিছু দিন পর আমেনা জুয়েল এর হাতে ৫০০০ হাজার টাকা তুলে দেয় । জুয়েল আমেনার উপার্জন দেখে খুশী হল এবং আমেনাকে কাপর তৈরির  জন্য উৎসাহ দিলো । জুয়েল এর পরিবার খুশি হল আমেনার উপার্জন দেখে । আমেনার সুন্দর কাপর তৈরির কথা দিন দিন ছড়িয়ে পড়লো । একদিন হটাৎ আমেনার কাছে একজন মানুষ আসলো । আমেনার  সুন্দর কাপড় তৈরির কথা শুনে এসেছে বললো । যে আমেনার বাসায় এসেছে তার নাম পলাশ ।পলাশের পটুয়াখালী সদর নিউ মার্কেট এ দোকান আছে । মেয়েদের জামা বিক্রয় করে । পলাশ আমেনাকে কিছু জামা বানিয়ে দিতে বললো । আমেনার তৈরি জামা পলাশ তার দোকানে বিক্রয় করবে এবং আমেনার সাথে জামা বিক্রয় এর লাভের একটি অংশ দিবে । পলাশ আমেনাকে জামা তৈরির সকল উপকরন দিয়ে যাবে আমেনা জামা বানাবে । আমেনা কাপড় বানানো শুরু করল ।আমেনার উপার্জন দিন দিন বাড়তে থাকলো । এক সময় আমেনা টাকা জমিয়ে জুয়েলকে মুদির দোকান করে দিলো । জুয়েল মিস্ত্রীর কাজ ছেড়ে দিয়ে বাড়ির পাশে মুদির দোকান নিয়ে বসে গেল । দিন দিন আমেনা ও জুয়েল এর উপার্জন বাড়তে থাকলো । তাদের পরিবারের দুঃখ কষ্ট লাঘব হলো । এদিকে আমেনা তার পরিবারের পাশাপাশি নিজের মা-বাবা কেও সাহায্য করতে লাগলো । আমেনা ও জুয়েল এর পরিবার সুখের জীবন এর পথ চলা শুরু করলো ।

এভাবে আমেনা পাথওয়ের মাধ্যমে নিজের পরিশ্রমে জীবনের কষ্টকে সুখে ফিরিয়ে নিয়ে আসে

পরিশেষে বলা যায় পাথওয়ের দর্জি বা সেলাই প্রশিক্ষন কার্যক্রম শহর ও গ্রাম সব জায়গায় অনেক গুরুত্ব  বহন করে । দেশের বেকারত্ব দূর করনের পাশাপাশি মানুষের আয়ের উৎস বাড়ছে । এতে পারিবারিক ভাবে তারা স্বনির্ভর হচ্ছে।পাথওয়ে দর্জি বা সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান এর মাধ্যমে মানুষ স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে ।

 

 

Related Articles

About Pathway

Pathway is the best Charity, Non-profit and volunteer organization in Bangladesh. It’s situated and head office is at Mirpur, Dhaka. Pathway always stands with the helpless people affected by various natural calamities. Mainly Pathway is a humanitarian organization dedicated to children, women, and third gender development in Bangladesh.  Pathway is approved and listed by the NGO Affairs Bureau Bangladesh. Registration No: 0778

Office Schedule

Saturday     10:00AM - 5:30PM
Sunday     10:00AM - 5:30PM
Monday     10:00AM - 5:30PM
Tuesday     10:00AM - 5:30PM
Wednesday     10:00AM - 5:30PM
Thursday     10:00AM - 5:30PM
Friday     Closed

List of Holidays

Office Address

House 02, Road 06, Senpara Parbata, Kafrul,
Mirpur, Dhaka-1216, Bangladesh
Phone: +88 02 58053743
Mobile: +88 01321 232980
E-mail: info@pathwaybd.org
Web: www.pathwaybd.org
Web: www.ajkerprosongo.com
Follow us on

Search